ই-রিটেইলিং হলো ই-কমার্স তথা ই-বিজিনেসের একটা বিশেষ রূপ বা ধরন যেখানে কোনোরূপ মধ্যস্থ ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা ছাড়াই সরাসরি ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহকদের পণ্য বা সেবা ক্রয়ের সুযোগ প্রদান করা হয় । ই-রিটেইলিংকে e-shop, e-store, Internet shop, Web shop, Web store, Online store, Virtual store, e-terling ইত্যাদি নামেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে । একজন গ্রাহক দোকানে যেয়ে দেখেশুনে মূল্য যাচাই করে যেভাবে পণ্য ক্রয় করে এবং মূল্য পরিশোধ করে পণ্য নিয়ে আসে, ই-রিটেইলিং এর ক্ষেত্রে তার প্রয়োজন হয় না । এক্ষেত্রে ক্রেতা ইন্টারনেটে দোকানের ওয়েব সাইটে যেয়ে পণ্য ও মূল্য তালিকা সার্চ করে । অনেক সময় একই ধরনের পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সম্মলিতভাবে ওয়েব পেজ খুলে গ্রাহকদের পণ্য ও মূল্য বিষয়ে তুলনা করার ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দেয় ।
অতঃপর সে যে প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কিনতে আগ্রহী তাদের নিকট ইন্টারনেটে ফরমায়েশ দেয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ই-চেক, ই-মানি ইত্যাদির মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করে । অতঃপর সরাসরি পণ্য গ্রাহকদের ঠিকানায় নিজস্ব গাড়িতে করে বা পার্শ্বেলের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয় । অনেক সময় স্থানীয় কোনো চেইন স্টোর থেকে তা সরবরাহ করা হয়ে থাকে । ক্রেতাদের ব্রান্ড আনুগত্যের কারণে এখন আর পণ্য দেখে শুনে কেনার তেমন প্রয়োজন পড়ে না । ফলে উন্নত দেশগুলোতে ভোক্তা পর্যায়ে কেনা-বেচায় রিটেইলিং হাউজগুলোতে ই-রিটেইলিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এতে বিপণন প্রতিষ্ঠানে ভিড় যেমনি কমেছে তেমনি জনশক্তির প্রয়োজনীয়তাও হ্রাস পেয়েছে । একদিকে গ্রাহকদের সময় ও শ্রমের সাশ্রয় হচ্ছে অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচের পরিমাণও কমছে। ২০১২ সালের খুচরা পর্যায়ের (B2C) কেনা-বেচায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮% বিক্রয় ই-রিটেইলিং পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়েছে। যার অর্থমূল্য ছিল ১৪২.৫ বিলিয়ন ডলার । ২০১২ সালে চীনে ২৪.২ কোটি লোক অনলাইনে শপিং করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ই রিটেইলিং পদ্ধতিতে সবচেয়ে বেশি বিক্রয়যোগ্য পণ্য ও সেবা হলো ভ্রমণ সংক্রান্ত বুকিং, কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এন্ড সফটওয়্যার, ভোক্তা পর্যায়ে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক সামগ্রী, অফিস সামগ্রী, খেলাধুলা ও শরীরচর্চা সামগ্রী, বই, ম্যাগাজিন, সংগীত সামগ্রী, খেলনা, স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যবর্ধক সামগ্রী, পোশাক ও কাপড় চোপড়, জুয়েলারি সামগ্রী, গাড়ি, ইলেকট্রনিক সেবা (ই-ব্যাংকিং ও অন্যান্য) ইত্যাদি ।